রোহিঙ্গা শিশুদের দেখতে ইউনিসেফের একজন শুভেচ্ছাদূত আসছেন কক্সবাজারে। কিন্তু তিনি কে? সপ্তাহখানেক আগেও এই তথ্যটুকু জানতেন না মাহবুবা আক্তার। যেমন জানতেন না, আদতে দোভাষীর কাজটি তিনিই করছেন। কারণ, ইউনিসেফ তাদের বিশেষ দূতের জন্য দোভাষী বাছাইয়ের চূড়ান্ত তালিকায় তখনো আরও একজনকে রেখেছেন। এমন সব দোলাচলের মধ্যে ২০ মে রাতে মাহবুবাকে জানানো হলো, তিনিই দোভাষী হিসেবে কাজ করছেন। আর কাজ করবেন ইউনিসেফের শুভেচ্ছাদূত ও বলিউড তারকা প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার সঙ্গে। কাজের নিশ্চয়তায় তিনি খুশি হয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু যে মানুষটির হয়ে তিনি দোভাষীর কাজ করবেন, তার নাম শুনে তো ভিরমি খাওয়ার জোগাড়!
মাহবুবা আক্তার বলছিলেন, ‘আমি তখন কী করব বুঝতে পারছিলাম না। মনে হচ্ছিল, একটি চিৎকার দিই। তবে ফোনে কথা বলছিলাম বলে কিছুক্ষণের মধ্যে নিজেকে সামলে নিলাম।’
২৪ মে। ততক্ষণে কক্সবাজার ছেড়েছেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। আমরা অভিজ্ঞতা শুনছিলাম মাহবুবা আক্তারের। কক্সবাজার সরকারি কলেজের হিসাববিজ্ঞান (স্নাতক) বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রীর চোখে-মুখে তখনো টানা চার দিন প্রিয় তারকার সঙ্গে সময় কাটানোর বিস্ময়। নভেম্বর থেকে ইউনিসেফের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে অনেক বিশিষ্ট মানুষের পাশে থেকে ভাষা বদলের কাজ করেছেন। তবে প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে থাকার সময়টুকু জীবনের অনন্য ঘটনা তাঁর কাছে।
২১ মে দুপুর ১২টায় ইউনিসেফের গাড়ি মাহবুবাকে নিয়ে চলল উখিয়ার হোটেল রয়েল টিউলিপে। হোটেলে খুব একটা সময় অপেক্ষা করতে হলো না তাঁকে। চলে এলেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। অবাক, বিস্ময়ভরা চোখে তাকিয়ে থাকলেন প্রিয় তারকার দিকে। দুপুরে প্রথম দেখায় হাত বাড়িয়ে দেওয়ার পর প্রিয়াঙ্কা চোপড়া মাহবুবাকে বললেন, ‘হ্যালো’। দু–এক কথার পর প্রশ্ন করলেন, ‘হিন্দি বোঝো?’ ‘বাংলাদেশের মানুষ বোঝে?’ মাহবুবা প্রিয়াঙ্কাকে জানালেন, ‘বেশির ভাগ মানুষই বোঝে, অনেকে বলতেও পারেন।’ বলিউড তারকার এমন সাবলীল কথাবার্তায় কিছুক্ষণের মধ্যেই মাহবুবার জড়তা কেটে গেল। পরিচিত মানুষের মতো কথা হলো।
No comments:
Post a Comment